নিউজ ডেস্ক : ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই মারা গেছেন। শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আব্দুল হাই মৃত্যুকালে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। নিউমোনিয়া, লিভার সিরোসিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ১৮ ফেব্রুয়ারি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে থাইল্যান্ডে নেওয়া হয়।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে বঙ্গবন্ধুর আহবানে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। তিনিই ঝিনাইদহে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন। ভারত থেকে মুজিব বাহিনীর ট্রেনিং নিয়ে দেশে কমান্ডার হিসাবে বিভিন্ন স্থানে পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি ঝিনাইদহ যুবলীগের আহবায়ক ও ১৯৭৩ সালে যুবলীগের মহকুমা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আশির দশকে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন তিনি। পরে ১৯৮৭ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং যুগ্ম সাধারন সম্পাদক হন।
আব্দুল হাই এমপির জন্ম ১৯৫২ সালের পহেলা মে শৈলকুপা উপজেলার মহম্মদপুর গ্রামে। পিতা ফয়জুদ্দিন মোল্লা ও মাতার ছকিরন নেছা দম্পতির ৩ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। তার শিক্ষাজীবন শুরু পার্শবর্তী মির্জাপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে পাশ করার পর ভর্তি হন বসন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। মাধ্যমিক পাশ করার পর ভর্তি হন ঝিনাইদহ কেশবচন্দ্র কলেজে। সেখান থেকে বিএ পাশ করেন।
১৯৯৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে ১৯৯৮ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসন ( শৈলকুপা উপজেলা) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে বারবার সংসদ সদস্য নির্বাটিত হন। ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০০৫ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন আব্দুল হাই এমপি। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
তার মৃত্যুর খবরে ঝিনাইদহের রাজনীতিবিদদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা শোক প্রকাশ করছেন।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: