নিউজ ডেস্ক: বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি। তিনি ১৯২১ সালের ৩১ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তদানীন্তন প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার মরহুম আবদুল হামিদ চৌধুরীর একমাত্র সন্তান ছিলেন তিনি।
আবু সাঈদ চৌধুরী কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভের পর ইংল্যান্ডের লিংকনস ইন থেকে ব্যার এট ল পাস করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আইন পেশার সাথে যুক্ত হন।
ভারত ভাগের পর ঢাকায় এসে ১৯৪৮ সালে ঢাকা হাইকোর্টে আবারও আইন পেশায় যুক্ত হন। ১৯৬০ সালে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের অ্যাডভোকেট জেনারেল এবং ১৯৬১ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন। তিনি পাকিস্তানের সাংবিধানিক কমিশনের সদস্য এবং বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন।
তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিযুক্ত হন। ১৯৭১ সালের ১৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে উপাচার্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি লন্ডনে অবস্হান করতেন । এই সময় তিনি ইউরোপ-আমেরিকার অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি, রাষ্ট্রনেতা ও কূটনীতিকের সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা পালন করেন।
স্বাধীনতার পর তিনি ঢাকায় ফিরে ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টর অব ল ডিগ্রি প্রদান করে।
তাঁর রচিত ‘প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলি’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত একটি মূল্যবান গ্রন্থ। তাঁর এ গ্রন্থ অবলম্বনে প্রবাসী লেখক আকতার হোসেন লিখেছেন ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট’। এতে সাবেক রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবন উঠে এসেছে।
সামরিক শাসক এরশাদ বিরোধী গনআন্দোলনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আবু সাঈদ চৌধুরী ১৯৮৭ সালের ২ আগস্ট লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন।
সম্পাদনা: লতিফুল বারী হামিম ।