নিউজ ডেস্ক: বাঙ্গালী নদীর তীরে স্বেচ্ছাশ্রমে দেওয়া বাঁধ ভেঙে গত তিন দিনে বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিমগাছি, কালেরপাড়া ও এলাঙ্গী ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভাঙা পানিতে খেতের ফসল নষ্ট হয়েছে এবং মৎস্যচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিন স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছরই বাঙ্গালী নদীর পানি বেড়ে নিমগাছি ইউনিয়নের ফরিদপুর ও রামনগর এলাকা দিয়ে মাঠে ঢুকে ফসলের ক্ষতি হয়। এ কারণে স্থানীয় লোকজন ৮-১০ বছর আগে নদীর পারে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ নির্মাণ করেন। এতে বর্ষায় সময় নদীর পানি বাড়লেও বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষা পেত। কিন্তু এ বছর পানি বাড়ায় গত বৃহস্পতিবার রাতে সেই বাঁধ ভেঙে যায়।
এই বাঁধ ভাঙা পানিতে তিন দিন ধরে নিমগাছি ইউনিয়নের ফরিদপুর, নান্দিয়ারপাড়া, সোনাহাটা, নাংলু এলাকার ফসলের মাঠ তলিয়ে যায়। কালেরপাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরঘাট, সরুগ্রাম, রামনগর, কান্দুনিয়া চরপাড়া ও এলাঙ্গী ইউনিয়নের শৈলমারি, তারাকান্দি, এলাঙ্গীসহ প্রায় ২০টি গ্রামের রোপা আমন ও আউশ ধান, বেগুন, মরিচ, কলা, পেঁপে, পটোল, করলা, বরবটি তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠ প্লাবিত হচ্ছে।
গতকাল দুপুরে ফরিদপুর গ্রামে গেলে কৃষক আবদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে ফরিদপুর গ্রামের কাছে বাঙ্গালী নদীর বাঁধ ফুটো হয়ে যায়। এ সময় গ্রামের লোকজন সেখানে বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পানির চাপে শেষ পর্যন্ত বাঁধ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
গ্রামের আরেক কৃষক আবদুল মজিদ বলেন, ‘বন্যার পানিতে আমার ৩০ শতক জমির পেঁপে, ১০ শতক জমির মরিচ ও ২০ শতক জমির বেগুনখেত তলিয়ে গেছে।’
নিমগাছি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুজাউদ্দৌলা বলেন, ‘বাঙ্গালী নদীর ফরিদপুর এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে আমার জলাশয়ের মাছ ভেসে গেছে।’
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সোবাহান বলেন, বাঙ্গালী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন জাতের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বগুড়ার সহকারী প্রকৌশলী হারুনর রশিদ জানান, অতি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঙ্গালী নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এ কারণে নদীতীর ভেঙে পানি ফসলের মাঠে ঢুকছে।