নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মাছ চাষে নিরব বিপ্লব সাধিত হয়েছে। ৩ দশকে মাছের উৎপাদন ২৫ গুণ বেড়েছে এবং মাছ চাষিরা তাদের উৎপাদিত মাছের ৭৫ শতাংশ এখন বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছে।
ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (আইএফপিআরআই) সর্বশেষ সমীক্ষায় একথা বলা হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রধানতঃ নিজেদের পারিবারিক প্রয়োজনের মাছ চাষের প্রচলিত ধারণা বদলে গেছে। ভোক্তাদেরও এখন নিজের পুকুর থেকে মাছ খাওয়ার সঙ্গে বাজার থেকেও মাছ কেনার হার অনেক বেড়েছে।
এ প্রসঙ্গে গবেষণা সমন্বয়ক সমীক্ষার প্রধান লেখক রিকার্ডো হারনান্ডেজ বলেন, আমি বিস্মিত হয়েছি যে উৎপাদনের পাশাপাশি পল্লী ও শহরের মাছ ব্যবসায়ী,
উপকরণ ও মাছের খাদ্য অনেক খাতে বেড়ে উঠেছে। সমীক্ষায় বলা হয়, বাড়তি চাহিদা, প্রযুক্তির উন্নয়ন যোগাযোগ ও অবকাঠামো, লাখ লাখ পুকুর মালিক এবং ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।
গবেষক বলেন, সরকার এ অগ্রযাত্রায় মাছের রেনু উৎপাদনে বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও রাস্তাঘাট নির্মাণের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
হারনান্ডেজ বলেন, খাদ্য তৈরির কারখানা, হ্যাচারী, চাষি ও ব্যবসায়ীর পাশাপাশি মাছের খাবার ও রেনু ক্রয়ের হার বেড়ে চলছে। প্রতিষেধকের ব্যবহার, শ্রমিক নিয়োগ ও বিনিয়োগও বাড়ছে।
সমীক্ষায় বলা হয়, আগে গ্রামের মাছ চাষিরা মূলতঃ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে মাছ বিক্রি করতো। কিন্তু এখন তারা তাদের উৎপাদিত মাছের দুই তৃতীয়াংশ ছোট বড় শহরের আড়তদারদের কাছে বিক্রি করছে।
মাছের চাষ বৃদ্ধির ফলে শহর ও গ্রামের গরীব পরিবারগুলোর খাদ্যাভাসেও পরিবর্তন এসেছে। চাল ছাড়াও তারা এখন মাছের মাধ্যমে পুষ্টির জোগান বাড়িয়েছে।
ফুড এ্যান্ড এ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) এর আগে তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে যে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ৪র্থ। সরকার ২০১৯ সালের মধ্যে দেশকে মাছ চাষে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে বর্তমান ৩৮ লাখ টন থেকে বাড়িয়ে ৪২ লাখ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।