নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের ওপর কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে হামলা চালিয়েছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সেখানে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। আতঙ্কে রয়েছেন দেশটিতে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরা।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার সূত্রপাত গত ১৩ মে। কিরগিজস্তানের স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় মিসর ও আরবের কয়েকটি দেশের শিক্ষার্থীদের। আহত হন কিরগিজস্তানের এক শিক্ষার্থী। এর জেরে গত ১৬ মে রাত থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা শুরু করে স্থানীয়রা।
বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়। পরে শিক্ষার্থীরা বাঁচার আকুতি জানাতে থাকেন। শুক্রবার রাতে এক ভারতীয় দূতাবাসে ফোন করে নিরাপত্তা ও সাহায্য চান।
শনিবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। দূতাবাসের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত যোগাযোগ রাখার জোর পরামর্শ দেন তিনি।
কিরগিজস্তানের ভারতীয় দূতাবাস এক্স বার্তায় জানায়, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। তবে এই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি ও শিক্ষার্থীদের বলছি যেকোনো পরিস্থিতিতে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের সহায়তায় যাবতীয় পদক্ষেপ নিতে দেশটির রাষ্ট্রদূতকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এক্স বার্তায় তিনি লেখেন, প্রয়োজনীয় সব সহায়তার জন্য আমি পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে নির্দেশ দিয়েছি। আমার অফিসও দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
পাকিস্তানের দূতাবাস জানিয়েছে, কিরগিজস্তানের মেডিকেল কলেজের কয়েকটি হাসপাতাল ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত বাড়িতেও হামলা হয়েছে। আবাসিক হলে ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা থাকে। হামলায় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
কিরগিজস্তানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বাংলাদেশি দূতাবাস থেকে তাদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কিরগিজস্তানে পড়তে যাওয়া একাধিক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, গত ১৩ মে বিশকেক শহরে স্থানীয় দুই-তিন বাসিন্দাদের সঙ্গে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত মিশরীয় কয়েকজন নাগরিকদের সংঘর্ষ হয়। পরে গত ১৬ মে রাত থেকে বিশকেক শহরে থাকা সব বিদেশিদের ওপর হামলা শুরু করে স্থানীয়রা। সেখানে থাকা পাকিস্তানি, বাংলাদেশি এবং ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ওপর একাধারে আক্রমণ চালাচ্ছে। পুরো শহরজুড়ে যেসব বসতবাড়িতে বিদেশিরা থাকে, সেখানে তাদের খুঁজে বের করে বাসায় ভাঙচুর চালানোসহ নারী পুরুষ নির্বিচারে মারধর করা হচ্ছে। এমনকি মেডিকেল কলেজগুলোর হোস্টেলে তারা ঢুকে পড়েছে। শহরজুড়ে পুলিশ মোতায়েন থাকলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা ব্যর্থ।
ঢাকানিউজ২৪.কম / কেএন
আপনার মতামত লিখুন: